type='text/javascript'/> সার্জেন্ট মহুয়া হাজংকে হয়রানি ‘ক্ষমতার চরম অপব্যবহার’

Header Ads Widget

সার্জেন্ট মহুয়া হাজংকে হয়রানি ‘ক্ষমতার চরম অপব্যবহার’

 

দুর্ঘটনায় আহত মনোরঞ্জন হাজংয়ের ন্যায়বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিতের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে মানববন্ধন করে বিভিন্ন সংগঠন। ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর
দুর্ঘটনায় আহত মনোরঞ্জন হাজংয়ের ন্যায়বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিতের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে মানববন্ধন করে বিভিন্ন সংগঠন। ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর

রাজধানীতে ব্যক্তিগত গাড়ির ধাক্কায় বাবা আহত হওয়ার ঘটনায় মামলা করত গিয়ে হয়রানির শিকার হন পুলিশ সার্জেন্ট মহুয়া হাজং। হয়রানির ঘটনাকে ‘ক্ষমতার চরম অপব্যবহার’ আখ্যা দিয়ে এর সমালোচনা করেছে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতারা।
সোমবার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মহুয়া হাজংয়ের বাবা মনোরঞ্জন হাজংয়ের ন্যায়বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন আয়োজন করা হয়। এ সময় বক্তারা বলেন, ক্ষমতার চাপে দুর্ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনীহা ছিল পুলিশ কর্মকর্তাদের। মহুয়া হাজং পুলিশের একজন সার্জেন্ট হওয়ার পরেও বাবার দুর্ঘটনায় মামলা করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন। তাঁকে নানাভাবে চাপে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।




আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অলিক মৃ বলেন, একজন পুলিশ সার্জেন্ট হয়েও বাবার দুর্ঘটনায় মামলা করতে পারছিলেন না মহুয়া হাজং। আজ মহুয়ার পাশে নিজের বাহিনী নেই। তিনি আরও বলেন, ক্ষমতার কাছে তাহলে সাধারণ মানুষ কতটা অসহায়? ঘটনার ১৪ দিন পর মামলা করা হলেও মনোরঞ্জন হাজংয়ের দুর্ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দেন অলিক মৃ।

এ সময় ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল বলেন, ‘মনোরঞ্জন হাজংয়ের দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তি একজন বিচারপতির ছেলে। তিনি যদি ন্যায়বিচার কায়েম করতে পারতেন, যদি ন্যায়বিচারক হতেন, তাঁর উচিত ছিল সন্তানকে পুলিশে সোপর্দ করা। তিনি সেটা করনেনি, উল্টো মহুয়া হাজংকে নানাভাবে প্রলোভন দেখানোর চেষ্টা করা হলো। কিন্তু মহুয়া হাজং কোনো প্রলোভনে নিজেকে বিক্রি করেননি। তিনি রাষ্ট্রের কাছে ন্যায়বিচার চেয়েছেন।’




মানববন্ধনে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ সাত দফা দাবি তুলে ধরেন হাজং স্টুডেন্ট কাউন্সিলের ঢাকা মহানগরের ক্রীড়া সম্পাদক নাঈম হাজং। অন্য দাবিগুলো হলো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও মামলা না নেওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের গাফিলতির জবাবদিহি ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ; আহত মনোরঞ্জন হাজংয়ের সুচিকিৎসা নিশ্চিত ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া; সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের চাকরি নিয়ে যেন শঙ্কা না থাকে, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা; মহুয়া হাজংয়ের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিত করা এবং সবার জন্য আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক বাদল হাজংয়ের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন আদিবাসী যুব ফোরামের সভাপতি অনন্ত ধামাই, আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী ফাল্গুনী ত্রিপুরা, বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠনের ঢাকা মহানগরের সভাপতি ডন যেত্রা প্রমুখ। 

ব্যক্তিগত গাড়ির ধাক্কায় ২ ডিসেম্বর গুরুতর আহত হন পুলিশের সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের বাবা মনোরঞ্জন হাজং। রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের চেয়ারম্যান বাড়ি ইউটার্নে দ্রুতগতির ব্যক্তিগত গাড়ি মনোরঞ্জন হাজংয়ের মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়েছিল। এতে গুরুতর আহত হয়ে এখন রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন বিজিবির সাবেক এই সদস্য।

বাবার এ দুর্ঘটনার জন্য সার্জেন্ট মহুয়া থানায় মামলা করতে গেলে তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিল পুলিশ। এ নিয়ে সমালোচনার মুখে দুই সপ্তাহ পর ১৬ ডিসেম্বর মামলা নিতে বাধ্য হয় বনানী থানা-পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করা হয়। তবে এর দুই দিন আগেই গুরুতর আহত মনোরঞ্জন হাজংকে দায়ী করে অভিযুক্ত গাড়িচালক সাঈদ হাসান থানায় একটি জিডি করেন।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ